Eagle TV Logo
Ad

ঝিনাইদহে বালি ব্যবসায়ীদের দখলে সড়ক-মহাসড়ক, সাধারণ মানুষ দিশেহারা

ঈগল টিভি ডেস্ক

ঝিনাইদহে বালি ব্যবসায়ীদের দখলে সড়ক-মহাসড়ক। উড়ন্ত বালি আবাসিক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। চরম ঝুঁকিতে শিশু বৃদ্ধরা।  অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন নগরবাসী। নিরবে সময় পার করে দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

দেখা যায়, ঝিনাইদহ জেলা শহরের বাইপাস ( পুরাতন ধোপাঘাটা ব্রীজ এলাকা, হামদহ-আরাপপুর, পুরাতন ট্রাক টার্মিনাল সড়ক) সড়ক ঘেসে বালু ব্যবসার সারি সারি পাহাড় গড়ে উঠেছে। প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়াতে দিবা-রাত্রী সেখানে চলছে কেনা বেচা। ব্যস্থতম এ সড়কে বালি বোঝায় ট্রাক সকাল সন্ধ্যায় রাস্তা দখল করে দাড়িয়ে থাকে। এতে করে যানবাহণ চলাচলে যেমন বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি উড়ন্ত বালি (রাস্তা পাশে রাখা বালি) আবাসিক ভবন গুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে। মনের অজান্তেই বালির কণা চোখে মুখে ঢুকে পড়ছে। অকালে অন্ধ হচ্ছে নিরিহ মানুষ। চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকছে শিশু ও বৃদ্ধরা।

 

একাধিক ভুক্তভোগী কামাল উদ্দীন, রহমান মোল্ল্যা, ইখলাস বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, হামদহ-আরাপপুর বাইপাস (বিকল্প সড়ক) সড়কের দুই পাশে রয়েছে অসংখ্য বেসরকারী হাসপাতাল ক্লিনিক ডায়গনষ্টিক সেন্টার, ফাযার সার্ভিস (দমকল বাহিনী) বাংলাদেশ টেলিকমিউনেকেসন্স কোম্পানী লিমিটেডের মাইক্রোওয়েভ স্টেশন, ( যার মাধ্যমে খুলনা মানিকগঞ্জ ঢাকাসহ সারা দেশের আকাশ যোগাযোগের নেটওর্য়াক স্থাপন করা হয়েছে)। আরো রয়েছে ঝিনাইদহ ২৫০ বেডের সদর হাসপাতাল, নার্সিং ইনিস্টিটিউট, পুলিশ লাইনস, গুরুত্বপুর্ণ স্কুল, কলেজ ,ম্দ্রাসা এবং নানা নামের শিশুদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ইদানিং সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে যে কোন মানুষ আৎকে উঠেন। কারণ নিত্য দিন দুর্ঘটনার শিক্ষার হচ্ছেন তারা। ইতোমধ্যে প্রাণ গেছে অনেকের। পঙ্গু হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। বালিতে চোখের কর্ণিয়া ক্ষত বিক্ষত হয়েছে হাজারো নারী পুরুষ শিশুর।

অপর দিকে জেলা শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লা ঘিরে থাকা পাকা সড়ক মহাসড়ক গুলোতে বাড়ি নির্মাণের সামগ্রী ফেলা রাখা হয়েছে। শহরের জিরো পয়েন্ট (পোস্ট অফিস মোড়) পায়রা চত্তর হয়ে ঝিনাইদহ – মুজিবনগর সড়কের স্থানীয় চুয়াডাঙ্গা বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়ক বিভাগের পাকা রাস্তার আংশিক, ফুটপাত, ড্রেন পুরাতন স্যালো ইঞ্জিন বিক্রেতা এবং লেদ মালিকদের (যন্ত্রপাতি তৈরীর কারখানা) দখলে। জেলা শহরে পৌরসভার পাকা ড্রেন দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে বিাশাল অট্টালিকা। অন্যান্য সড়কের খালি স্থান গুলো জেলা পরিষদের অসৎ লোকজনের প্রত্যক্ষ মদদে ক্রমেই দখলবাজদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে।

অন্য দিকে রাত একটু গভীর হলে সড়কের আরাপপুর এলাকায় সারিবদ্ধ হয়ে দাড়িয়ে থাকে উত্তর বঙ্গগামী লোড ট্রাক। রাস্তার ধারে গড়ে উঠা খুপড়ি খাবারের দোকান গুলো চলে খাওয়া দাওয়া। বে-আইনি ভাবে ট্রাক গুলো পার্ক করে চালক হেল্পার সহ অন্য খেতে বসেন। ওই সময় জরুরী সেবার যানবাহণ গুলো সহজে চলাচল করতে পারেনা।

চলমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ কমিটি এবং সিটিজেন ফোরামের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের দফায় দফায় তাগিত দেওয়া হয়েছে। কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ এ প্রসঙ্গে জানান, পৌরসভার নিজস্ব কোন ম্যাজিষ্ট্রেট না থাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা যাচ্ছে না । তবে পৌরসভা থেকে একাধিকবার মাইকিং করা হয়েছে । ঐ সমস্ত বালি ব্যবসায়িকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে যেন খুব দ্রুতই তারা রাস্তার পাশ থেকে তাদের মালামাল সরিয়ে নেন ।

ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা জানান, জেলা পরিষদের নজরে আসা মাত্রই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে । বিষয়টি নজরদারিতে রয়েছে ।

ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার পারভেজকেকে একাধিকবার মোবাইল করে পাওয়া যায়নি ।

ঝিনাইদহ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রথীন্দ্রনাথ রায় জানান, সড়কের পাশে রাখা বালিসহ অন্যান্য সামগ্রি সরানোর ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দফায় দফায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে । কিন্তু কাজ হচ্ছে না । তিনি মনে করেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ঠ সড়ক বিভাগের এগিয়ে আসা দরকার । পাশাপাশি নাগরিকদের সজচতন হওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন ।

Ad
সর্বশেষ