বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অনেক ছাত্র-জনতার ত্যাগ, রক্ত, হত্যা, আহত ও পঙ্গুত্বের বিনিময়ে পেয়েছি আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা। এই দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনে যারা নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্ররা বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরস্বরণীয় হয়ে থাকবে। তাদের আবদান ও অর্জন বাংলার মানুষ চিরকাল মনে রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।
৫ আগস্টের এই স্বাধীনতার সুফল বাংলাদেশের ঘরে ঘরে পৌছানো দরকার। এ জন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় সংস্কার। সংস্কার করতে হবে সংবিধান, আইন ও বিচার ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা, প্রশাসন, পুলিশ, নির্বাচন কমিশন, দুদক, এনবিআর, ব্যাংক ব্যবস্থাপনা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সমূহ। এই সমস্ত সংস্কার না করলে দ্বিতীয় স্বাধীনতার অর্জন বিফলে যাবে, বৃথা হয়ে যাবে। এতো শহীদের রক্তের সাথে বেঈমানী করা হবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনুস এর নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকার রাষ্ট্রীয় সংস্কারের কাজ শুরু করেছে। এই সমস্ত সংস্কার করতে পারলে বাংলাদেশে বৈষম্য দূর হবে, দেশের মানুষ সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। আর কোন সরকার জনগণের উপর জুলুম নির্যাতন করতে পারবে না, ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠতে পারবে না।
এ ছাড়াও অন্তর্বর্তী সরকারকে জুলাই গণহত্যা, পিলখানা হত্যা, হেফাজতের ৫ মে’এর গণহত্যা ও ২৮ আক্টোবর এর হত্যার বিচার করতে হবে। এজন্য অন্তরবর্তী সরকারকে পর্যাপ্ত সময় দেয়া প্রয়োজন। এই সরকারের প্রতি মানুষের অনেক আশা ও আকাঙ্খা। এই সমস্ত হত্যার বিচার না করলে ছাত্র-জনতার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করা হবে, বাংলার মানুষের সাথে প্রহসন করা হবে।
এই সকল হত্যাকান্ডের বিচার ও রাষ্ট্রীয় সংস্কার পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার যথাযথভাবে করবে বলে বিশ্বাসযোগ্য নয়। তারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। কিছু রাজনৈতিক দল দ্রæততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে চাপ প্রয়োগ করছে। অথচ এই সমস্ত রাজনৈতিক দল বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে তেমন কিছু করতে পারেনি। আগামী ১৬ বছরে কিছু করতে পারতো কিনা সন্দেহ। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার মাত্র ১ মাস হয়েছে এখনই তাদের তর সইছে না। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে গেছে। এই সরকারকে বলবো এদের কথায় কর্ণপাত করবেন না। সমগ্র জাতির কথা চিন্তা করুন।
জুলাই গণহত্যা, পিলখানা হত্যা, হেফাজতের ৫ মে’এর গণহত্যা ও ২৮ আক্টোবর এর হত্যার বিচার এবং রাষ্ট্রীয় সংস্কার করার পর জাতীয় নির্বাচন দেয়া দরকার। এ জন্য সকল রাজনৈতিক দল ও বাংলাদেশের সমগ্র জনসাধারণের অন্তর্বর্তী সরকারকে পর্যাপ্ত সময় ও পরামর্শ দেয়া প্রয়োজন।
মো: মাহবুবুর রহমান
ডেপুটি রেজিস্ট্রার
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ