শৈলকুপায় কানাই-বলাই গ্রুপের প্রধান কানাই অস্ত্রসহ গ্রেফতার
* হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজি, মাদক, হামলা, ভাংচুর সহ অসংখ্য মামলার আসামী
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় সামাজিক দ্বন্দ্ব, সংঘাত, হামলা-লুটপাট ও চাঁদাবাজদের গডফাদার হিসেবে পরিচিত কানাই-বলাই গ্রুপের প্রধান জামিরুল ইসলাম অরফে কানাইকে (৫৫) একটি আগ্নেয়াঅস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে যৌথবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে উপজেলার সারুটিয়া ইউনিয়নের ভুলুন্দিয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেঢতার করে যৌথবাহিনী।
গ্রেফতারকৃত জামিরুল ইসলাম অরফে কানাই উপজেলার ওই মৃত জুমারত মন্ডলের ছেলে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, নব্বই দশকের তৎকালীন সক্রিয় গণবাহিনীর সন্ত্রাসী আলোচিত কানাই-বলাই আপন দুই ভাই। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজি, মাদক, হামলা ও ভাঙচুর-লুটপাটের অনেক মামলা রয়েছে। এলাকাবাসীর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে শৈলকুপা উপজেলার সারুটিয়া ইউনিয়নের ভুলুন্দিয়া গ্রামে কানাই-বলাইয়ের বাড়িতে অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। এসময় যৌথবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে কানাই পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে যৌথবাহিনীর সদস্যরা তাকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে বাড়ির পিছনের গর্ত থেকে একটি পুরাতন আগ্নেয়াঅস্ত্র উদ্ধার করা হয়। রাতেই যৌথবাহিনীর সদস্যরা তাকে শৈলকুপা থানায় হস্তান্তর করেন।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান জানান, মঙ্গলবার রাতে উপজেলার ভুলুন্দিয়া গ্রাম থেকে জামিরুল ইসলাম অরফে কানাই নামের একজনকে একটি আগ্নেয়াঅস্ত্রসহ আটক করা হয়। পরে রাতেই তাকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেন যৌথ বাহিনী।
ওসি জানান, তার বিরুদ্ধে শৈলকুপা থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে শৈলকুপা থানায় অ¯সহ একাধিক মামলা রয়েছে।
এদিকে এলাকাবাসী জানান, নব্বই দশকের তৎকালীন সক্রিয় গণবাহিনীর সন্ত্রাসী আলোচিত কানাই-বলাই আপন দুই ভাই। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজি, মাদক, হামলা ও ভাঙচুর-লুটপাটের অনেক মামলা রয়েছে। পরিবারটির পুরুষ সদস্যরা হাজতবাস করেছে বহুবার। দুই ভাইয়ের সন্ত্রাসী রাজত্ব কায়েম করতে লেলিয়ে দেয় পরবর্তী বংশধরদের। সারুটিয়া ইউনিয়নজুড়ে এ পরিবারটির প্রতি সাধারণ মানুষের আতঙ্কের শেষ নেই। পারিবারিক সন্ত্রাসী কার্যক্রমের নষ্ট ঐতিহ্য ধরে রাখতে সুদীর্ঘ বছর তারা বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। সন্ত্রাসী পরিবারটির সবাই নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে জানা যায়। বেপরোয়া সন্ত্রাসী পরিবারটির কাছে জিম্মী রয়েছে সাধারণ মানুষ এমনকি রাজনৈতিক নেতারাও। হাট-ঘাট, বালিমহল, গ্রাম্য শালিশ, দখল দারিত্ব, সর্বত্র দাপিয়ে বেড়ায় তাদের ছত্রছায়ায় লালিত ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের অন্তত ১৫ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ। অভিযোগ, মামলা, জেল-জরিমানা, থানা-পুলিশ এসব তাদের নিকট মামুলি ব্যাপার। রাজনৈতিক গ্রুপদ্বন্দ্বকে পুঁজি করে করে জাসদ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি, আওয়ামী লীগ সকল ঘাটেই পরিবারটির রয়েছে একছত্র আধিপত্য বিস্তার। এর আগে গত বছরের (১৪ নভেম্বর) অতিষ্ঠ ইউনিয়নবাসীর গোপন অভিযোগের ভিত্তিতে কানাইয়ের ছেলে জুয়েল ও বলাইয়ের ছেলে রানাকে তাদের বাড়ি থেকে একটি পিস্তল, ৬ বোতল ফেন্সিডিল ও বিভিন্ন রকমের ২৫টি দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে যৌথবাহিনী।